ড্রাগ লাইসেন্স করার নিয়ম

ড্রাগ লাইসেন্স করার নিয়ম । ফার্মেসি ব্যবস্থাপনার গাইডলাইন

টিপস এবং ট্রিকস ড্রাগ লাইসেন্স
যতটা কঠিন মনে হয় ড্রাগ লাইসেন্স করার নিয়ম ততটা কঠিন নয়। শুধু যদি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট মজুদ থাকে তাহলে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে ২/৩ মাসের মধ্যে ড্রাগ লাইসেন্স পাওয়া যায়।
আমি সেই ড্রাগ লাইসেন্সের কথা বলছি ঔষধ বা ফার্মেসী ব্যবসা করতে গেলে যে ড্রাগ লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক।
ঔষধের সকল তথ্য এক জায়গায় পেতে চাইলে
অর্থাৎ ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া ঔষধ খুচরা বা পাইকারী বিক্রি করা দেশীয় আইনে দন্ডনীয় অপরাধ।
ড্রাগ লাইসেন্স বা ঔষধ সংক্রান্ত যাবতিয় তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (DGDA)।
জেনে নিন শরীরের উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন কত হওয়া উচিত

ড্রাগ লাইসেন্স করার নিয়ম

ড্রাগ এক্ট ১৯৪০ ও এর অধীন প্রনীত বিধি ও ঔষধ নিয়ন্ত্রন অধ্যাদেশ এর শর্তসমূহ মেনে স্থানীয় ঔষধ প্রশাসনের কার্যালয়ে সমস্ত কাগজপত্র ও নির্ধারিত ফি ট্রেজারি চালানের কাগজপত্র জমা করে আবেদন পত্র জমা দান করা যাবে।
প্রেসক্রিপশন ছাড়াই সেবনযোগ্য ঔষধ গুলোর নাম ও বিস্তারিত জেনে নিন
পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় যাচাই বাছাইয়ের পর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আবেদনকারীর নামে ড্রাগ লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি ৯০ কার্য দিবসের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
জেনে নিন ঘরে বসে ড্রাইভিং লাইসেন্স কিভাবে করবেন

ড্রাগ লাইসেন্স করার জন্য কি কি লাগে

ড্রাগ লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের দেওয়া বেশকিছু শর্তাবলী মেনে আবেদন পত্র জমা দিতে হয়।
এর মধ্যে প্রথমত কিছু ডকুমেন্টস সহ আরোও কিছু শর্তাবলী পালন করতে হবে।
কিভাবে কোথায় পাবেন করোনার বুস্টার ডোজ
ঔষধ ব্যবসা পরিচালনার জন্য ২ ধরনের ক্যাটাগরিতে লাইসেন্স প্রদান করা হয়। একটা হলো মডেল মেডিসিন শপ আর একটি হলো মডেল ফার্মেসি।
মডেল মেডিসিন শপের জন্য ১২০ স্কয়ার ফুট জায়গা লাগবে আর মডেল ফার্মেসি করতে হলে লাগবে  ৩০০ স্কয়ারফুট জায়গা।
আরও শর্ত থাকে যে মডেল মেডিসিন শপের জন্য যেকোন গ্রেডের একজন ফার্মাসিস্ট থাকতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ থেকে বাঁচতে জেনে নিন
অপরদিকে মডেল ফার্মেসি তে একজন এ গ্রেড (গ্রাজুয়েট) ফার্মাসিস্ট সার্বক্ষণিক উপস্থিত থাকতে হবে।
এছাড়া মডেল ফার্মেসি তে শীতাতপ নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
আপনার প্রক্রিয়াধীন ড্রাইভিং লাইসেন্স কি অবস্থায় আছে জেনে নিন

ড্রাগ লাইসেন্স করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

ড্রাগ লাইসেন্স করার জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের দেওয়া ফর্মে আবেদন পত্র সহ আরো যে সমস্ত কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তার তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো:
  • ফরম -৭ এ আবেদন পত্র
  • নবায়নকৃত ট্রেড লাইসেন্স
  • আবেদনকারির জাতীয় পরিচয় পত্র
  • ট্রেজারী চালানের মূল কপি
  • আবেদন কারির ব্যাংক সচ্ছলতার সনদ
  • ফার্মাসিস্টের সার্টিফিকেট, অঙ্গীকারনামা ও জাতীয় পরিচয় পত্র
  • দোকান ঘর ভাড়ার চুক্তিনামা
উপরোল্লিখিত কাগজ পত্রাদির ফটোকপি সত্যায়িত করে আবেদন পত্রের সাথে জমা দিতে হবে।
করোনা থেকে বাচতে হলে জানতে হবে
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর যেকোন সময় যাচাই বাচাইয়ের জন্য আপনার মূল ডকুমেন্টস গুলো জমা নিতে পারে। যাচাই বাছাইয়ের পর আবার সেগুলো ফেরত দিয়ে দিবে।

ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য কত টাকা ফি জমা দিতে হয়

মডেল মেডিসিন শপ আর মডেল ফার্মেসির জন্য একই ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে মেট্রোপলিটন বা পৌরসভার ভিতরে হলে  ২৫০০ টাকা ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
করোনা থেকে বাঁচার উপায় জানুন
সিটি বা পৌরসভার বাহিরে হলে  ১৫০০ টাকা ট্রেজারি চালানে জমা দিতে হবে।
উল্লেখ্য উপরোক্ত ফির সাথে  ১৫% ভ্যাট জমা দিতে হবে। এর বাহিরে ড্রাগ লাইসেন্স করার জন্য কোন রুপ ফি দিতে হবে না।

ফার্মেসী ব্যবস্থাপনা

ফার্মেসি ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ফার্মেসি ব্যবস্থাপনার উপর সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে।
উপরের শর্তাবলী গুলো ফার্মেসি ব্যবস্থাপনার মধ্যেই পড়ে। তবে এর বাহিরেও আরও অনেক গুলো দিক নির্দেশনা দেওয়া আছে।
যে ঔষধ গুলো ঘরে রাখলে বিপদে কাজে লাগে
ফার্মেসি ব্যবসা পরিচালনার জন্য সেই নির্দেশিকা গুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে। সকলের জ্ঞাতার্থে গুরত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশনা তুলে ধরা হলো।
১। ঔষধ মোড়কের নির্দেশিত তাপমাত্রায় ঔষধ সংরক্ষণ করতে হবে। তাপ সংবেদনশীল ঔষধ গুলো রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করতে হবে।
২। ওটিসি মেডিসিন ও প্রেসক্রিপশন মেডিসিন, ইউনানী, আয়ুর্বেদিক, হার্বাল ঔষধ ও হেলথ রিলেটেড প্রোডাক্ট গুলো আলাদা আলাদা সেলফে রাখতে হবে।
জিডি করতে আর থানায় যেতে হবে না, এবার ঘরে বসে অনলাইনে জিডি করুন
৩। নিবন্ধনবিহীন, মিসব্র্যান্ডেড, কাউন্টারফিট, ফিজিয়ান স্যাম্পল ফার্মেসিতে ক্রয় বিক্রয় বা বিতরন করা যাবে না।
৪। ফার্মেসিতে ফুড সাপ্লিমেন্ট সংরক্ষণ করা যাবে না।
৫। ফার্মেসি তে বিক্রয়ের উদ্দ্যেশে মেয়াদোত্তীর্ন ঔষধ সংরক্ষণ করা যাবে না।
৬। কোন সরকারী ঔষধ ফার্মেসিতে সংরক্ষণ করা যাবে না।
৭। আমদানিকৃত ঔষধের মোড়কে ডি এ আর নাম্বার এম এ নাম্বার এবং এম আর পি দেওয়া থাকতে হবে নতুবা সেগুলো অবৈধ বলে বিবেচিত হবে।
৮। দালালের কাছ থেকে ঔষধ কেনা যাবে না।
৯। ওটিসি ঔষধ ব্যতীত অন্য কোন ঔষধ প্রেসক্রিপশন ব্যতিরেকে বিক্রয় করা যাবে না।
১০। ঔষধ ক্রয় বিক্রয়ের রেকর্ড রাখতে হবে।
১১। ঔষধ বিক্রয়ের ক্যাশ মেমো প্রদান করতে হবে।
১২। বিক্রয়কৃত ঔষধের সেবনবিধি ক্রেতাকে বুঝিয়ে দিতে হবে।
১৩। ড্রাগ লাইসেন্স এবং ফার্মাসিস্ট সার্টিফিকেটের নবায়নকৃত ফটোকপি দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।
১৪। লাইসেন্সি অথরিটির অনুমতি ব্যতিত ফার্মেসির নাম, ঠিকানা, হোল্ডিং নাম্বার ও মালিকানা পরিবর্তন করা যাবে না।
১৫। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে কোন ভাবেই ঔষধ বিক্রয় করা যাবে না।
এ সংক্রান্ত আরোও তথ্য জানার জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন।

পরিশেষে

সঠিক কাগজপত্র দিয়ে নির্ধারিত নিয়মে ড্রাগ লাইসেন্স করার জন্য আবেদন পত্র জমা দিলে  ৯০ কার্য দিবসের মধ্যে ড্রাগ লাইসেন্স পাওয়া যাবে।
কাগজপত্র ঠিকঠাক আর ড্রাগ লাইসেন্স করার নিয়ম ভালভাবে জানলে ড্রাগ লাইসেন্স করতে এখন আর খুব একটা বেগ পেতে হয় না।
কাগজপত্র আপডেট থাকলে ড্রাগ লাইসেন্স করার নিয়ম জটিল কিছু নয়। তবে এজন্য সঠিক উপায়ে আগাতে হবে।