জরুরী ওষুধ

জরুরী ওষুধ । যেগুলো সবসময় ঘরে রাখা উচিত

স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য প্রযুক্তি

জরুরী ওষুধ গুলো সবসময় বাড়িতে রাখলে বিপদের মুহুর্তে তা মূল্যবান প্রান বাচায়। আজ কিছু ওষুধের কার্যকারিতা এবং জরুরী প্রয়োজনে সেগুলোর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই বিক্রয় ও সেবনযোগ্য ওষুধের তালিকা
প্রথমেই বলে রাখি,ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করা উচিত নয়।অসুস্থতা ছোট হোক বা বড় অবশ্যই ডাক্তারের শরনাপন্ন হওয়া উচিত।
জেনে নিন জেনেরিক অনুযায়ী ওষুধের ব্র্যান্ড নাম
তবে অসুস্থতা যেহেতু বলে কয়ে আসে না সেহেতু কিছু জরুরী ওষুধ যা সবসময় ঘরে রাখা উচিত।অপ্রত্যাশিত অসুস্থতায় প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে প্রয়োগ করে রোগীর প্রান বাঁচানো যেতে পারে।
বিএমআই ক্যালকুলেটর দিয়ে জেনে নিন আপনার শরীরের আদর্শ ওজন কত
বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে চাইলেই হাতের কাছে ফার্মেসী বা ওষুধের দোকান পাওয়া যায় না।অথবা গভীর রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে ওষুধের দোকান খোলা পাওয়া যায় না।
জানতে চান কিভাবে ড্রাগ লাইসেন্স করতে হয়
সেইসব ক্ষেত্রে কিছু জরুরী ওষুধ ঘরে রাখা যেতে পারে।যা রোগীর কষ্ট কমাবে।কিছু ক্ষেত্রে রোগীর প্রান বাঁচাতে মূখ্য ভুমিকা পালন করবে।

 

করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জানতেঃ

জরুরী ওষুধ

জরুরী ওষুধ এর তালিকা

তো আসুন জেনে নিই এমন কিছু ওষুধের নাম,কার্যকারিতা এবং ব্যবহারবিধি।পাশাপাশি এই ওষূধ গুলো ঘরে রাখার চেষ্টা করি যাতে বিপদের মূহুর্তে কাজে লাগে।
মহামারি করোনার পাশাপাশি শুরু হয়েছে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ,জেনে রাখুন

১। প্যারাসিটামল (Paracetamol)

সাধারন জ্বরে সবচেয়ে বেশী ব্যবহ্যত একটি ওষুধ হলো প্যারাসিটামল।জ্বরের মাত্রা অনুযায়ী ৬ ঘন্টার ব্যবধানে ১ টা করে প্যারসিটামল সেবন করা যেতে পারে।
তবে জ্বরের মাত্রা তীব্রতা বাড়লে বা ৩ দিনের বেশী জ্বর স্থায়ী হলে অবশ্যই ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হবে।
জ্বরের সাথে পেট ব্যথা,চোখের সাদা অংশ হলুদ হওয়া বা জন্ডিসের যেকোন লক্ষন প্রকাশ পেলে প্যারাসিটামল সেবন বন্ধ করে ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরী।
অনেক সময় জ্বরের তীব্রতা বেশী হলে বিশেষ করে ১০০ ডিগ্রীর উপরে জ্বর হলে সাবজিটরী ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিতে পারে।

২। ট্রামাডল (Tramadol)

কোন প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই ব্যথার জন্য ট্রামাডল ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি এসমা রোগীরাও সেবন করতে পারে।
এন্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্সের ভয়াবহতা ও পরিনতি জেনে নিন

৩। টাইমোনিয়াম সালফেট (Tiemonium sulphate)

যেকোন ধরনের পেটের ব্যথায় এটি কারযকরী।মহিলাদের পিরিয়ডের প্রথম দিন গুলোর ব্যথা উপশমের জন্য এটি বিশেষ ভাবে কার্যকরী।

৪। ওমিপ্রাজল (Omeprazole)

বুক জ্বালা পোড়া বা গ্যাসের সমস্যায় ভুগে না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম।
এখেত্রে ওমিপ্রাজল পাকস্থলীতে এসিডের গঠন কমিয়ে বুক জ্বালা বা গ্যাস প্রশমনে সহায়তা করে।গ্যাসের ব্যথার তীব্রতা অনেক সময় প্রচন্ড আকার ধারন করে।
যদি ওমিপ্রাজল সেবনের ৩০ মিনিটের মধ্যে জ্বালা বা ব্যথার তীব্রতা না কমে তবে অবশ্যই নিকটস্থ হাসপাতালের শরনাপ্নন হতে হবে।

৫। এলুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড সাসপেনশন (Aluminum hydroxide suspension)

তীব্রতার মাত্রা অনুযায়ী বুক জ্বালা পোড়া বা গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য এলুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড সাসপেনশন সেবন করা যেতে পারে।
এটি ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়।ঠান্ডা অবস্থায়ও খাওয়া যায়।তবে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসাবে পাতলা পায়খানা হতে পারে।তবে এতে ভয়ের কোন কারন নেই।

৬। ওরস্যালাইন (Oral rehydration saline)

ডায়রিয়ার পানি শূন্যতা প্রতিরোধে স্যালাইনের কোন বিকল্প নেই।পানি শূন্যতা নানা শারীরিক জটিলতা জন্ম দেয়।
ডায়রিয়ার সাথে জ্বর থাকলে বা ২ দিনের বেশী ডায়রিয়া থাকলে বা পিপাসায় মুখ শুকিয়ে গেলে  বা পায়খানার সাথে রক্ত গেলে সেখেত্রে ডাক্তারের শরনাপ্নন হওয়া উচিত।
যদি আপনার উচ্চ রক্ত চাপ থাকে তাহলে স্যালাইন খাওয়ার আগে রক্তচাপ মেপে নেওয়া উচিত।

 

৭। রুপাটিডিন (Rupatadine)

বাজারে প্রচলিত এন্টি হিস্টামিন গুলোর মধ্যে তুলনামুলক কম ঝুঁকিপূর্ণ রুপাটিডিন।
এলারজিক রাইনিটিস এর জন্য রাতে রুপাটিডিন সেবনে হাচি ও নাক দিয়ে পানি পড়া উপশম হতে পারে।

৮। সিলভার সালফাডিয়াযিন (Silver sulfadiazine)

দুর্ঘটনা বশত শরিরের কোন অংশ পুড়ে গেলে পোড়া জায়গাটি যথাসম্ভব পরিস্কার করে শুকনা অবস্থায় সিলভার সালফাডিয়াযিন অয়েন্টমেন্টটি লাগিয়ে দিন।
কখনোই ঝলসে যাওয়া চামড়া টেনে তোলার চেষ্টা করবেন না।পুড়ে যাওয়া ক্ষত বেশী হলে অবশ্যই নিকটস্থ হাসপাতালে নিন।

৯। পভিডন আয়োডিন অয়েন্টমেন্ট (Povidon iodine ointment)

কাটা ছেড়ার কারনে রক্তপাত হলে সেটি পরিস্কার শুকনা কাপড় দিয়ে চেপে ধরে রাখুন।
রক্তপাত কিছুটা বন্ধ হলে সেখনে পভিডন আয়োডিন অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দিন।স্যাভলন ব্যবহার না করাই ভাল।
ক্ষতের ধরন অনুযায়ী রক্তপাত বন্ধ না হলে ডাক্তারের শরনাপন্ন হওয়া উচিত।

১০। এসপিরিন (Aspirine)

আকস্মিক হার্ট এটাকের যেকোন লক্ষন দেখা দিলে সাথে সাথে ২/৩ টী এসপিরিন খেয়ে নিন।
যথাসম্ভব দ্রুত হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করুন।আকস্মিক বুকে ব্যথা,বাম হাত,চোয়াল বা গলার বাম দিকে ব্যথা হওয়া হার্ট এটাকের অন্যতম লক্ষন।

শেষকথা

আবারো বলছি,ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা উচিত নয়।উপরোক্ত ওষুধ গুলো শুধুমাত্র জরুরী ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।তথাপি কোন ওষূধে কারো এলার্জি থাকলে তা সেবন না করাই ভালো।
অন্যদিকে মহিলাদের ক্ষেত্রে যারা বুকের দুধ খাওয়ান বা গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন অবশ্যই জরুরী।জরুরী ওষুধ গুলো ঘরে রাখুন এবং ওষুধ নিদিষ্ট তাপমাত্রায় শিশুদের নাগালের বাহিরে রাখুন।