প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ভেরিয়েন্টের আবির্ভাব করোনার টিকার কার্যকারিতা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।এরই প্রেক্ষিতে করোনার তৃতীয় ডোজ তথা বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে।
৬০ বছরের বেশি বয়সী ও করোনাকালে যাঁরা সম্মুখসারিতে থেকে কাজ করেছেন, তাঁরা করোনা ভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ সবার আগে পাবেন।
জেনে নিন জেনেরিক অনুযায়ী ওষুধের ব্র্যান্ড নাম
৬০ বছরের বেশী বয়স্ক ও সম্মুখসারির যোদ্ধাদের মধ্যে যাঁরা দ্বিতীয় ডোজ ছয় মাস আগে নিয়েছেন, তাঁরা আগে বুস্টার ডোজ পাবেন। বুস্টার ডোজের জন্য আলাদা করে নিবন্ধন করতে হবে না।
আসুন জেনে নেওয়া যাক,বুস্টার ডোজ কি এবং কারা পাবেন করোনার Booster Dose।
বুস্টার ডোজ কি
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় গুণবর্ধক মাত্রা বা বুস্টার ডোজ বলতে কোনও টিকার প্রাথমিক মাত্রা প্রদানের কিছু সময় পরে যে অতিরিক্ত বা সম্পূরক মাত্রাটি প্রদান করা হয়, তাকে Booster Dose বুঝায়।
করোনাভাইরাসের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেয়া যারা সম্পন্ন করেছেন তাদেরকেই একটি নির্দিষ্ট সময় পর তৃতীয় ডোজ নিতে হবে এবং এটিকেই Booster Dose বলা হচ্ছে।
জানতে চান কিভাবে ড্রাগ লাইসেন্স করতে হয়
তবে দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার কতদিন পর বুস্টার ডোজ নেয়া হবে এবং প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে যে টিকা দেয়া হয়েছিলো সেটিই তৃতীয় ডোজ হিসেবে দেয়া হবে কি-না তা এখনও নিশ্চিত নয়।
বুষ্টার ডোজ
পনেরই ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ কোটি ৭৪ লাখেরও বেশি মানুষকে প্রথম ডোজ আর দুই ডোজ দেয়া সম্পন্ন হয়েছে ৪ কোটি ৪১ লাখেরও বেশি মানুষকে।
এর বাইরে প্রায় ষোল লাখ শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ আর দুই ডোজ টিকাদান সম্পন্ন হয়েছে দুই লাখ ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর।
ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই বিক্রয় ও সেবনযোগ্য ওষুধের তালিকা
-
৩৯ টি ওটিসি মেডিসিন এর নাম ও ব্যবহার পদ্ধতি জেনে নিন।
দেশে এ মূহূর্তে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম, মডার্না ও সিনোভ্যাক টিকা দেয়া হচ্ছে।
সরকারের হিসাব অনুযায়ী দেশে এখন প্রায় ৫ কোটি ডোজ টিকার মজুদ রয়েছে।
তবে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফাইজারের টিকাকে Booster Dose হিসাবে ব্যবহার করা হবে বলে জানা যায়।
কারা পাবেন বুস্টার ডোজ
দেশের ৬০ বছরের বেশি বয়সী ও করোনাকালে যাঁরা সম্মুখসারিতে থেকে কাজ করেছেন, তাঁরা করোনাভাইরাসের টিকার Booster Dose আগে পাবেন।
সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, ষাটোর্ধ্ব ও সম্মুখসারির যোদ্ধাদের মধ্যে যাঁরা দ্বিতীয় ডোজ ছয় মাস আগে নিয়েছেন, তাঁরা আগে বুস্টার ডোজ পাবেন। বুস্টার ডোজের জন্য আলাদা করে নিবন্ধন করতে হবে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী অবশ্য আগেই এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন যে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি ও চিকিৎসক এবং চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের Booster Dose দেয়া হবে।
বুস্টার ডোজের জন্য আলাদা করে নিবন্ধন করার প্রয়োজন নেই।যারা যে কেন্দ্র থেকে পূর্বের ডোজের টিকা নিয়েছেন তারা সেই কেন্দ্র থেকেই Booster ডোজের টিকা পাবেন।
বুস্টার ডোজের জন্য নতুন করে এসএমএস দেওয়া হবে।এসএমএস পাওয়ার পর টিকা কার্ডের কপি ডাউনলোড করে নিয়ে টিকা কেন্দ্রে যেতে হবে।
সুরক্ষা এপ এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বুস্টার ডোজের সব কার্যক্রম নিয়ন্তন করা হবে।
স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে টিকার মজুদ অনুযায়ী বুস্টার ডোজের টিকা পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে জানা যায়।
উল্লেখ্য,বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ই মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।
বুস্টার ডোজের উপকারিতা
গবেষণায় দেখা গেছে, দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পর শরীরে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, Booster Dose নিলে তৈরি হয় তার চেয়ে অনেক বেশি।
এ কারণে গবেষকেরা আশাবাদী যে তৃতীয় ডোজ নিলে ধীরে ধীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও বাড়বে।
তবে এ বিষয়ে জোর দিয়ে বলার মতো সময় এখনো আসেনি বলে মনে করছেন তাঁরা।
এর আগে প্রাথমিক গবেষণাতেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, বুস্টার ডোজ নেওয়া হলে শরীরে অ্যান্টিবডির গুণগত মান বেড়ে যায়, রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বেশি সক্রিয় হয়।
করোনার নতুন নতুন ধরনে কার্যকর হবে এমন টিকা নিয়ে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে।
আগামী বছরের মার্চ নাগাদ নতুন টিকা বাজারে আসতে পারে। কিন্তু বর্তমান টিকাগুলোর মান বাড়ানো হলেও কিছু দুর্বলতা থেকে যেতে পারে। কারণ, ভবিষ্যতে অমিক্রন অন্যভাবে দ্রুত সংক্রমণশীল ভাইরাসে পরিণত হতে পারে।
টিকা সংক্রান্ত আরোও বিস্তারিত তথ্যের জন্য সুরক্ষা ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
পরিশেষে
নতুন নতুন রুপে করোনার আবির্ভাব যেমন সাধারন মানুষকে দ্বিধা দ্বন্দে ফেলেছে তেমনি বিজ্ঞানীদের গবেষনায় নতুন নতুন বিষয় যুক্ত হচ্ছে।ফলে তারাও কিছুটা বিভ্রান্ত বটে।
এই অবস্থায় কোন প্রকার দ্বিধান্বিত না হয়ে সময় মতো করোনার ৩য় তথা বুস্টার ডোজ গ্রহন করে সাধারন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটাই সকলের জন্য উত্তম।
Comments are closed.