ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম

অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করার নিয়ম

জাতীয় সেবা টিপস এবং ট্রিকস ড্রাইভিং লাইসেন্স
প্রযুক্তির ছোয়ায় বদলে গেছে বিশ্ব। বাদ যায়নি আমাদের মতো মধ্যম আয়ের বাংলাদেশও। তাই তো আজ মানুষ ঘরে বসেই বহুবিধ নাগরিক সুবিধা ভোগ করতে পারছে। তারই অংশ হিসাবে আজকে আমরা অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে জানবো।
আপনার প্রক্রিয়াধীন ড্রাইভিং লাইসেন্স কি অবস্থায় আছে জেনে নিন
কিছুদিন আগেও ড্রাইভিং লাইসেন্স করা একজন সাধারন মানুষের জন্য ছিল চরম ভোগান্তি এবং আতংকের বিষয়।
বিশেষ করে বি আর টি এ অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং তাদের মদদপুষ্ট দালাল চক্রের বাহিরে কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পেত না ।
মেডিসিন ব্যবসার জন্য ড্রাগ লাইসেন্স প্রয়োজন? জেনে কিভাবে ড্রাগ লাইসেন্স করা যায়।
এ জন্য গ্রাহকদের মোটা অংকের টাকা খরচ করতে হতো । আর দিনের পর দিন অফিসে ধর্না দিতে হতো।
এ অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকার প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে পুরো সিস্টেমটাকে ডিজিটালাইজেশন করে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম

ফলে এখন ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রত্যাশি ব্যক্তি ঘরে বসেই ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন, ফিস জমা এবং অন্যান্য কার্যাদি সম্পন্ন করতে পারে।
বৃদ্ধ বয়সের ভোগান্তি দুর করতে সরকার এনেছে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি
সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি, যেভাবে অনলাইনে নিবন্ধন করবেন
আমরা জানি , ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে প্রথমে লার্নার বা শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার পূর্বশর্ত

১। পেশাদার বা অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবার পূর্বশর্ত হলো লার্নার বা শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে।
২। আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম ৮ম শ্রেনী পাশ হতে হবে।।
৩। অপেশাদার লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১৮ বছর এবং পেশাদার লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ২১ বছর।
৪। আবেদনকারীকে মানসিক ও শারীরিক ভাবে সম্পুর্ন সুস্থ হতে হবে।

লার্নার বা শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইন্সেস

প্রথমেই বলা হয়েছে যে,পেশাদার বা অপেশাদার লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য লার্নার বা শিক্ষানবিস ড্রাইভিং করতে হবে।
এর আওতায় নির্দিষ্ট তারিখে লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেষ্টে পাস করার পর মূল লাইসেন্সের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
তাই প্রথমেই জেনে নিই লার্নার বা শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আপনার কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দরকার হবে।

লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

১। নির্ধারিত ফরমে আবেদন অনলাইনে আবেদন।
২।  আবেদনকারীর ছবি, ছবির সাইজ সর্বোচ্চ 150 kb (300 x 300 px)
৩।  রেজিষ্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট (সর্বোচ্চ 600 kb)। মেডিক্যাল সার্টিফিকেটের ফর্মের জন্য  এখানে ক্লিক করুন
৪।  জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপি (সর্বোচ্চ 600 kb)
৫।  ইউটিলিটি বিলের স্ক্যান কপি (সর্বোচ্চ 600 kb),  আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা যদি ভিন্ন হয় তবে বর্তমান ঠিকানার ইউটিলিটি বিল সংযুক্ত করতে হবে।
৬।  বিদ্যমান ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্ক্যান কপি। ড্রাইভিং লাইসেন্সের নবায়ন/শ্রেণী পরিবর্তন/শ্রেণী সংযোজন/ লাইসেন্সের ধরণ পরিবর্তণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । (সর্বোচ্চ 600 kb)
৭।  অনলাইনে আবেদন দাখিলের সময় ভুয়া তথ্য প্রদান করা হলে তার লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ও স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

লার্নার বা শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে

বি আর টি এর নির্ধারিত ফী  ক্যাটাগরি A এর জন্য ৫১৮/-টাকা ও ক্যাটাগরি B এর জন্য ৭৪৮/- টাকা জমা দিতে হবে। অনলাইনে পরিশোধ।
লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুনরায় একটি নির্ধারিত ফরমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফী প্রদান করতে হবে।
পরবর্তীতে স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে।
গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণপূর্বক স্মার্ট কার্ড ইস্যু করা হয়।
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রিন্টিং সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে তা গ্রহণের বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়।
এবার আমরা অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করার বিস্তারিত নিয়ম আলোচনা করবো।

অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করার নিয়ম

গ্রাহককে প্রথমে লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ অনলাইনে (bsp.brta.gov.bd)-এর মধ্যমে আবেদন করতে হবে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম

উপরের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নতুন ইউজার হলে নিবন্ধন করতে হবে আর আগের ইউজার হলে লগ ইন করে সব সেবা গ্রহন করা যাবে।
অনলাইন সিস্টেম থেকে তার লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করা যাবে এবং গ্রাহক সাথে সাথেই সিস্টেম থেকেই তার শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রিন্ট করে নিতে পারবে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম

এরপর ২/৩ মাস প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তাকে নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নির্ধারিত কেন্দ্রে লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট-এ অংশ গ্রহণ করতে হবে।
এসময় প্রার্থীকে প্রয়োজনীয় প্রমাণক, তার লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স (মূল কপি) ও লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কলম সাথে আনতে হবে।
১। নির্ধারিত ফরমে আবেদন।
২। রেজিষ্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট।
৩। ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর সত্যায়িত ফটোকপি।
৪। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন।
৫। সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।

স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে

বি আর টি এ এর দ্বারা পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য নির্ধারিত ফী  ২,৭৭২/-টাকা। একইভাবে  অপেশাদার লাইসেন্সের জন্য নির্ধারিত ফী ৪,৪৯৭/-টাকা।

ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন ফরম

বি আর টি এ এর ওয়েবসাইটে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য নির্ধারিত আবেদন ফরমটি পাওয়া যাবে। তবে আপনাদের কথা চিন্তা করা আবেদন ফরমের পিডিএফ ফরম এখানে দেওয়া হলো।
ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন ফরম (পিডিএফ)

online driving licence renewal – অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স রিনুয়াল পদ্ধতি

লার্নার বা শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা স্মার্টকাড ড্রাইভিং লাইসেন্স করার মতোই online driving licence renewal করার জন্য কিছু পদ্ধতি অনুসরন করতে হয়।
পাশাপাশি এ জন্য কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয়। নিম্নে online driving licence renewal পদ্ধতিটি বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

online driving licence renewal করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

১। নির্ধারিত ফরমে আবেদন
২। রেজিষ্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট (পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)
৩। ন্যাশনাল আইডি কার্ড -এর সত্যায়িত ফটোকপি
৪। নির্ধারিত ফি জমাদানের রশিদের বিআরটিএ কপি
৫। সদ্য তোলা ০২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি

online driving licence renewal পদ্ধতি (পেশাদার)

পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সধারীদেরকে মেয়াদ উর্ত্তীন লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য পুনরায় একটি ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
পরীক্ষায় উর্ত্তীন হওয়ার পর নির্ধারিত ফি ( মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ৪,১৫২/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ৫১৮/- টাকা জরিমানাসহ ) জমা দিতে হবে।
এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে।
গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণের জন্য গ্রাহককে নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে উপস্থিত হতে হয়।
স্মার্ট কার্ড প্রিন্টিং-এর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।

online driving licence renewal পদ্ধতি (অপেশাদার)

গ্রাহককে প্রথমে নির্ধারিত ফি ( মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ২,৪২৭/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ৫১৮/- টাকা জরিমানাসহ) জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে।
আবেদনপত্র ও সংযুক্ত কাগজপত্র সঠিক পাওয়া গেলে একইদিনে গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণ করা হয়।
স্মার্ট কার্ড প্রিন্টিং সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।

 

 

Comments are closed.