ইউটিউব প্রতি ১০০০ ভিউতে কত টাকা দেয় তা নির্ভর করে অনেকগুলো প্যারামিটারের উপর। প্রদর্শিত এডের সংখ্যা, সিপিসি, সিপিএম এর তারতম্যের কারনে ভিউ প্রতি ইনকামের সঠিক পরিমান নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।
যাদের বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল বা ওয়েবসাইট আছে যেগুলো এডসেন্স দ্বারা মনিটাইজ করা সেই চ্যানেল বা সাইটের ভিজিটরের সংখ্যা বা ভিউ এর সংখ্যা এবং ক্লিকের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে এডের লভ্যাংশ পেয়ে থাকে।
-
বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য অনলাইন ইনকাম সাইট গুলো নামের তালিকা দেখে নিন
মূলত ইউটিউব এবং এডসেন্স দুটাই গুগলের মালিকানাধীন হলেও দুটো কিন্তু একেবারেই আলাদা।ইউটিউব হলো বিখ্যাত ভিডিও শেয়ারিং সাইট।
ইউটিউব শর্টস ভিডিও ডাউনলোড করতে চান? দেখে নিন সহজ উপায়
এখানে প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিডিও আপলোড করছে এবং ভিডিও দেখছে।
এডসেন্স এর কাজ হলো সেই ভিডিওগুলোতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে পয়সা ইনকাম করা এবং সেই পয়সার ভাগ ভিডিও এর মালিকের সাথে শেয়ার করা।
Youtube Income Check
ইউটিউব মূলত নিম্নবর্নিত বিষয় গুলো বিবেচনা করে পাবলিশারদের টাকার লভ্যাংশ প্রদান করে থাকে।তাই Youtube Income Check করতে চাইলে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা থাকতেই হবে।
১। এড ভিউ
২। CPC
৩। CPM
৪। Traffic Country
৫। কিওয়ার্ড (Keyword)
প্রতি ১০০০ ভিউতে কত টাকা
মোটামুটি এই কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে ধারনা থাকলেই অনুমাননির্ভর ভাবে Youtube Income Check করতে পারবেন।যদিও সেটা কখনোই নির্ভুল হিসাব হবে না।অবশ্যই কমবেশী হবে।
ইউটিউবের নিয়মকানুন
পুরা প্রক্রিয়াটি সম্পর্ন হয় স্বয়ংক্রিয় এলগারিদমের মাধ্যমে।অনেক সুক্ষ সুক্ষ বিষয় বিশ্লেষন করে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন থেকে অর্জিত অর্থের ভাগ বন্টন করা হয়। যার কোন স্থায়ী নিয়ম নেই যে ইউটিউব প্রতি ১০০০ ভিউতে কত টাকা দেয়।
তবে এডসেন্স সম্পর্কে যদি আপনার সামান্য ধারনা থাকে বা আপনি সিপিসি/সিপিএম/আরপিএম সম্পর্কে কিছুটা জেনে থাকেন তবে বিষয়টা বুঝতে আপনার সুবিধা হবে।
সিপিসি (CPC) মানে হলো (Cost per click) অর্থাৎ ভিজিটরের ক্লিকের উপর নির্ভর করে এডসেন্সের টাকা প্রদানের নির্নায়ক। আপনার চ্যানেল বা সাইটের ভিজিটর ক্লিকের পরিমানের সাথে যে সংখ্যাটি গুন হবে সেই সংখ্যাটি অনির্ধারিত।একই ধরনের সাইটের প্রায় একই ধরনের কনটেন্ট অথচ সেখানে সিপিসি আলাদা হতে পারে যার ফলে উভয়ের ইনকামের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ফারাক দেখা যেতেই পারে।
ইউটিউব প্রতি ১০০০ ভিউতে কত টাকা দেয়
সিপিএম (CPM) মানে হলো (Cost per mile) অর্থাৎ ১০০০ ভিউ।সোজা কথায় আপনার সাইটের ১০০০ ভিউ হয়েছে ,এখন এই ১০০০ এর সাথে যে সংখ্যাটি গুন হবে সেটিও নির্ধারিত নয়।এটা প্রতি ক্ষনে ক্ষনে উঠানামা করে।এর সাথে কিওয়ার্ডের সিপিসি,ভিজিটর,ভিজিটরের অঞ্চল ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচিত হবে।
এডসেন্স ড্যাশবোর্ড
সিপিসি বা সিপিএম রেটের কম বেশী হওয়া বা তারতম্যের অনেক গুলো কারন আছে।যা অতি অল্প পরিসরে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়।
ইউটিউব প্রতি মিনিটে একটি ভিডিও দেখার অনুমতি দেয়। তারমানে ১০ মিনিটের একটি ভিডিও তে ১০ টি বিজ্ঞাপন প্রদর্শন হওয়ার সুযোগ থাকে।। কিন্তু এটি ভাল অভ্যাস নয় কারণ দর্শকরা ক্রমাগত বিজ্ঞাপন পছন্দ করেন না। ড্যানিয়েলশাস্টল প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে বছরের পর বছর ধরে হিসাব কষে বের করেছেন যে প্রতি ১০ মিনিটের দীর্ঘ ভিডিওতে ২-৩ টি বিজ্ঞাপন সর্বোত্তম।
যদিও বিজ্ঞাপনের দৈর্ঘ্য এবং ভিডিওর দৈর্ঘ্যের জন্য এটি পরিবর্তন হতে পারে, সাধারণ নীতি হল একজন দর্শকের মানসিকতা বোঝা। আপনি কি একজন দর্শক হিসেবে ভিডিওর মাঝে মাঝেই বিজ্ঞাপন পছন্দ করবেন?
যদি আপনার ভিডিও বিষয়বস্তুতে ইউটিউব অ্যাডসেন্স থেকে দেওয়া বিজ্ঞাপনটি সিপিএম-ভিত্তিক হয়, তাহলে দর্শকদের অবশ্যই 30 সেকেন্ডের বেশি সময় ধরে বিজ্ঞাপনটি দেখতে হবে।
২০১৩ সালে ইউটিউব প্ল্যাটফর্মের জন্য প্রতি হাজার (সিপিএম) গড় খরচ $ 7.60 নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মানে হল যে প্রতিটি ইউটিউব কন্টেন্ট নির্মাতার গড় আয় প্রতি হাজার ভিউতে প্রায় 7.60 ডলার। 500 ভিউ সহ একটি ভিডিও মোটামুটি $ 3.80 উপার্জন করবে। সিপিএম (কস্ট পার মাইল) যা প্রতি হাজার ভিউতে রাজস্ব উপস্থাপন করে।
একটি উদাহরণ গ্যাংনাম স্টাইল ভিডিও যা এক বিলিয়ন ভিউ সংগ্রহ করেছে। এই ধরনের ভিডিও থেকে প্রায় 7.8 মিলিয়ন ডলার উপার্জন হবে।
যাইহোক, পূর্বে বলা হয়েছে, এগুলি অনুমান, এবং অনেক ইউটিউবার বিজ্ঞাপনের গুণমান, ক্লিক-থ্রু রেটের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়গুলির উপর নির্ভর করে কমবেশি করতে পারে।
ইউটিউবে আয়ের পরিমান
এটা জোর দিয়ে বলা সম্ভব নয় যে,ইউটিউব প্রতি ১০০০ ভিউতে কত টাকা দেয়।এটার জন্য নিদিষ্ট নিয়ম নীতি নাই যার দ্বারা স্পষ্ট করে বলা যাবে প্রতি ভিউ এ আয়ের পরিমান।
এটা নির্ভর করে যে আপনার কনটেন্টে কি পরিমান এড প্রদর্শিত হচ্ছে, প্রদর্শিত এডের সিপিসি/আর পি এম রেট কত,প্রদর্শিত এডটি কোন কোম্পানির, এরকম আরোও অনেক কিছু বিষয়ের উপরে।
সঠিক ভাবে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে মনিটাইজেশন চালু করার পর অঞ্চল, অডিয়েন্সের ক্যাটাগরি, কনটেন্টের মান এসব কিছু ইউটিউব আয়ের পরিমানের উপর বড় ভুমিকা রাখে।অনেকে বাচ্চাদের খেলনা দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ইউটিউব থেকে ইনকাম করছে।
অনেক বাচ্চা আছে ইউটিউবে যাদের ফ্যান, ফলোয়ার আর ইনকামের ফিরিস্থি শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠে যাবে।তবে তাদের প্রতি মিলিয়ন ভিউয়ের সাথে ইনকামের যে হিসাব তার সাথে আপনার আমার হিসাব মিলবে না।
কারন আগেই বলেছি অঞ্চল ভেদে বা ভিজিটরের ধরন ভেদে ইউটিউব প্রতি ১০০০ ভিউতে কত টাকা দেয় তা নিদিষ্ট কোন সীমারেখা নাই।
ইউটিউব থেকে কত আয় করা যায়
নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, একটি ভিডিও এর ১ হাজার ভিউ এর জন্য আপনি ৩ থেকে ৭ ডলার অবধি পেতে পারেন।আবার সেই একই ভিডিও অন্য কোন অঞ্চলের ভিজিটর দেখে থাকলে এই রেট বাড়তে অথবা কমে যেতে পারে।
প্রথমত ভিডিওতে প্রদর্শিত এডের সংখ্যার উপর আয়ের পরিমান নির্ভর করে। যেহেতু গুগল একটি স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া বিভিন্ন ওয়েবসাইটে এড প্রদর্শন করে থাকে।
দেখা গেল, নতুন একটা চ্যানেল এ গুগল স্বয়ংক্রিয় ভাবে কম সংখ্যায় এড দেখায়। তাই নতুন অবস্থায় প্রতি ভিউতে ইনকামের হারটা অনেক কম থাকে।
চ্যানেলের ফ্যান ফলোয়ার বাড়ার সাথে সাথে গুগল স্বয়ংক্রিয়ভাবে এডের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। তখন টাকা আয়ের পরিমানটাও বাড়তে থাকে।
দ্বিতীয়ত প্রতিযোগিতার বাজারে একই প্রোডাক্টের জন্য অনেক গুলো কোম্পানী এড দিতে আসে আর তখন সেই প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন প্রচারের খরচ বেড়ে যায়, অর্থাত বিজ্ঞাপন প্রচারের মুল্য কমবেশী থাকে। একটা বেশী মুল্যের এড আপনার চ্যানেলে প্রদর্শিত হলে আপনি বেশী টাকা পাবেন।
-
ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার সম্পুর্ন গাইড লাইন দেখে নিন।
ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায়
youtube চ্যানেল বানালেন,ভিউ/সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়ালেন,এডসেন্স মনিটাইজ অন করলেন,এখান থেকে ডলারের অংকে টাকা ইনকাম হতে শুরু হলো,
এবার প্রশ্ন হলো ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায় কি?
উপায় খুব সহজ,আপনার এডসেন্স একাউন্টের সাথে আপনার স্থানীয় একটি ব্যাংক একাউন্ট যুক্ত থাকবে।নির্দিষ্ট সময়ে এডসেন্স একাউন্ট থেকে টাকা আপনার ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যাবে।
অথবা আপনি চাইলে এডসেন্স থেকে আপনার নামে আপনার আয় করা টাকার সংখ্যা দিয়ে চেক ইস্যু করে সেই টাকা চেকের মাধ্যমে তুলতে পারবেন।
তবে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এডসেন্স থেকে আয় করা টাকা নিজের ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করে নিয়ে পরে চেক মাধ্যমে সেই টাকা নগদীকরন করে নেওয়াটাই ইউটিউব থেকে টাকার তোলার উপায় গুলোর মধ্য সবচেয়ে সহজ উপায়।
অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে আরোও জানতে এবিষয়ে অনলাইনে ইনকাম ২০২১: অনলাইন থেকে আয়ের সহজ উপায় পোষ্ট টি পড়ে দেখুন।
পরিশেষে
সর্বপরি, ইউটিউব প্রতি ১০০০ ভিউতে কত টাকা দেয় এটা স্পষ্ট করে বুঝতে চাইলে এডের সিপিসি এবং আরপিএম এবং কিওয়ার্ড সম্পর্কিত ধারনা অবশ্যই থাকতে হবে।
Comments are closed.