ইতিপূর্বে মাঙ্কিপক্স বা Mpox পশুর মাঝে ছড়ালেও এখন মানুষের মাঝে ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে ১৫ বছরের নিচের বাচ্চা এবং গর্ভবতী নারীর জন্যে অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ।
মাঙ্কিপক্স বা Mpox কি
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস বা বাঁদরবসন্ত ভাইরাস বা MPXV (সংক্ষেপে MPV) হল একটি ডাবল-স্ট্র্যান্ডেড ডিএনএ জেনেটিক ভাইরাস যা মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যে মাঙ্কিপক্স সৃষ্টি করে।
এটি পক্সভাইরাডে পরিবারের অর্থপক্স ভাইরাস গণের অন্তর্গত। এটি মানুষের অর্থপক্স ভাইরাসগুলির মধ্যে একটি যার মধ্যে ভ্যারিওলা (VARV), কাউপক্স (CPX) এবং ভ্যাক্সিনিয়া (VACV) ভাইরাস রয়েছে।
এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে সচেতনতা
এটি ভ্যারিওলা ভাইরাসের সরাসরি পূর্বপুরুষ নয় বা এর সরাসরি বংশধর নয়, যা স্মলপক্স সৃষ্টি করে। এটি প্রধানত বানর এবং ইদুরের মধ্যে বেশী ছড়ায়।
মাঙ্কিপক্স রোগটি গুটিবসন্তের মতো, তবে হালকা ফুসকুড়ি এবং এর মৃত্যুহার কম। তবে এটি অত্যাধিক যন্ত্রনাদায়ক একটি সংক্রামক রোগ।
ডেঙ্গু থেকে বাঁচার উপায়
এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৪৫০জন+ এর অধিক মানুষের মৃতবরণ করেছে। এটার টিকা আছে কিন্তু সেই টিকা বিশ্বব্যাপী পাঠানোর মত ফান্ড নাই ।
আক্রান্ত ব্যক্তির পাশে থাকলে কিংবা তার ব্যবহৃত কিছু স্পর্শ করলেও ছড়ায় এই ভাইরাস।
জেনে নিন ওষুধের জেনেরিক নাম ও কাজ
মাঙ্কিপক্স (Mpox) একটি সংক্রামক রোগ যা মাঙ্কিপক্স ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট। এটি একটি বেদনাদায়ক ফুসকুড়ি, ফোলা লসিকা গ্রন্থি এবং জ্বর সৃষ্টি করতে পারে।
বেশিরভাগ মানুষ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে, কিন্তু কেউ কেউ খুব অসুস্থ হতে পারে।
মানব দেহের উচ্চতা অনুযায়ী ওজন কত হওয়া উচিত,জেনে নিন সহজেই
যেভাবে ছড়ায় মাঙ্কিপক্স বা Mpox ভাইরাস
যে কেউ Mpxv এ আক্রান্ত হতে পারে। এটি পশু থেকে মানুষের দেহে এবং এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের মাঝে সংক্রামিত হতে পারে।
এটি সংক্রমিত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ছড়াতে পারে।
এছাড়াও নিম্নবর্ণিত মাধ্যমে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসটি আক্রান্ত ব্যক্তির দেহ থেকে অন্যান্য ব্যক্তির দেহে সংক্রামিত হতে পারে।
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই সেবনযোগ্য ওষুধের তালিকা
যেমন:
১। স্পর্শ- চুম্বন, বা যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে।
২। প্রাণী- শিকার করা, চামড়া খোলা, বা রান্না করার সময়
বস্তু- যেমন দূষিত চাদর, পোশাক বা সুই।
৩। আক্রান্ত গর্ভবতী নারীর গর্ভের সন্তানের মধ্যে সহজেই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
Mpox একটি প্রাণী থেকে একজন ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে
পশুর কামড় বা আঁচড়।
বন্য খেলা যা খাবারের জন্য রান্না করা হয়।
পণ্য, যেমন চামড়া বা পশম, সংক্রমিত পশুদের তৈরি।
শরীরের তরল পদার্থের সাথে সরাসরি যোগাযোগ বা mpox সহ প্রাণীদের ফুসকুড়ি।
কিছু দরকারী ওষুধের নাম ও কার্যকারিতা,যা সবসময় ঘরে রাখা উচিত
মাঙ্কিপক্স বা Mpox ভাইরাস আক্রান্তের লক্ষন সমূহ
মাঙ্কিপক্সের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ঘেমে যাওয়া, পিঠে ব্যথা, মাংসপেশির টান ও অবসাদ। জ্বর শুরু হওয়ার প্রায় এক থেকে চার দিন পরে, ত্বকে ফুসকুড়ি শুরু হয়।
এমপক্স ফুসকুড়ি প্রায়শই প্রথমে মুখে, হাতে বা পায়ে প্রদর্শিত হয় এবং তারপরে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে এই ভাইরাসে আক্রান্তের প্রধান প্রধান লক্ষনসমূহ নিম্নরুপঃ
জ্বর।
ত্বকে ফুসকুড়ি।
ফোলা লিম্ফ নোড।
মাথাব্যথা।
পেশী ব্যথা এবং পিঠে ব্যথা।
ঠাণ্ডা।
ক্লান্তি।
জ্বর কমলে শরীরে দেখা দেয় ফুসকুড়ি। অধিকাংশ ঘটনায় শুরুতে মুখে ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
পরে অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে; বিশেষ করে হাতের তালু ও পায়ের তলায়।
মাঙ্কিপক্স বা Mpox এ আক্রান্ত হলে চিকিৎসা বা করনীয়
সুনিদির্ষ্টভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য সেরকম কোন চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। প্রথম চিকিৎসা হলো সঠিকভাবে রোগীর যত্ন নেওয়া। যাতে দ্রুত রোগীর শরীরের ক্ষত গুলো সেরে উঠে।
কিছু গুটিবসন্তের টিকা ACAM2000 এবং Jynneos ভ্যাকসিন সহ mpox প্রতিরোধ করতে পারে। এই ভ্যাকসিনগুলি এমপক্স প্রতিরোধ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে কারণ স্মলপক্স এবং এমপক্স সম্পর্কিত ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হয়।
শুধু আক্রান্ত ব্যক্তি নয়, যারা এমপক্সে আক্তান্ত সংস্পর্শে এসেছেন তাদের জন্য টিকা দেওয়া জরুরী। কিছু লোক যারা তাদের কাজের ক্ষেত্রে ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকিতে রয়েছে, যেমন ল্যাব কর্মী তাদেরও টিকার প্রয়োজন হতে পারে। যতদুর জানা যায় এই টিকা অনেক ব্যয়বহুল/।
১। ফুসকুড়ি আছে এমন লোকেদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়িয়ে চলুন যা দেখতে mpox এর মতো।
২। সাম্প্রতিক সময়ে আক্রান্ত ব্যক্তি সাথে যাদের কাছাকাছি ছিলেন তাদের জানিয়ে দেওয়া।
৩। সব দাগ পড়ে যাওয়া এবং নতুন ত্বকের স্তর গঠিত হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে অবস্থান করা।
৪। ক্ষত ঢেকে রাখা এবং অন্য লোকেদের কাছাকাছি থাকলে ভালভাবে মাস্ক ব্যবহার করা।
৫। যথাসম্ভব শারীরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।
৬। সংক্রামিত প্রাণী বা ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকা কাপড়, চাদর, কম্বল বা অন্যান্য উপকরণগুলি স্পর্শ করা বা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা।
৭। সংক্রামিত ব্যক্তি বা প্রাণীর সাথে যোগাযোগের পরে সাবান এবং পানি দিয়ে হাত ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে। যদি সাবান এবং পানি পাওয়া না যায় তবে অ্যালকোহল-ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।
৮। ভাইরাস বহন করতে পারে এমন প্রাণী এড়িয়ে চলতে হবে।
উপসংহার
বিশ্বব্যাপি করোনার ভাইরাসের ভয়াল ছবলের ক্ষত না শুকাতেই মাঙ্কিপক্স বা Mpox ভাইরাস টি মূর্তিমান আতংক হয়ে দেখা দিয়েছে।
একমাত্র সাবধানতা অবলম্বন করে এই ভয়াবহ ভাইরাসের আক্রমন থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
কারন এটি একটি ছোয়াচে ভাইরাস। তাই সংক্রমণ এড়াতে শুধুমাত্র সাবধানতাই যথেষ্ট।
এসংক্রান্ত আরোও তথ্য পেতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।