করোনা ভ্যাকসিন

করোনা ভ্যাকসিন পাওয়ার অগ্রাধিকার তালিকায় আছেন কিনা দেখে নিন

করোনা স্বাস্থ্য
প্রায় ১৬ কোটি মানুষ আছে দেশে আর প্রথম দফায় করোনা ভ্যাকসিন আসবে ৫০ লাখ। স্বভাবতই প্রশ্ন আসছে তাহলে ১৬ কোটির মধ্যে কারা সেই ৫০ লাখ মানুষ?কিসের ভিত্তিতে বিতরন করা হবে এই ভ্যাকসিন?
ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই বিক্রয় ও সেবনযোগ্য ওষুধের তালিকা
সর্বশেষ(১৩ জানুয়ারী) পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের তথ্য তুলে ধরা হলোঃ-
মোট আক্রান্তের সংখ্যা= ৯২১০৩৯১৪
মৃতের সংখ্যা :- ১৯৭২৪৬৪
সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যাঃ- ৬৫৯৫২৪০০
বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যাঃ- ২৪১৭৯০৫০

 

জেনে নিন জেনেরিক অনুযায়ী ওষুধের ব্র্যান্ড নাম
সর্বশেষ(১৩ জানুয়ারী) পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের তথ্য তুলে ধরা হলোঃ-
মোট আক্রান্তের সংখ্যাঃ- ৫২৪৯১০
মৃতের সংখ্যাঃ- ৭৮৩৩
সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যাঃ- ৪৬৯৫২২

 

করোনায় নাকাল পুরা বিশ্ববাসী করোনা ভ্যাকসিন এর প্রতিক্ষায় আছে। কিন্তু প্রকৃত অবস্থা হলো,সফতার সাথে ভ্যাকসিন আবিস্কার,ট্রায়াল এবং পর্যাপ্ত পরিমানে উৎপাদনের তেমন কোন আশানুরুপ খবর আমরা পাইনি। কিছু দেশ নিজদের চেষ্টায় করোনা ভ্যাকসিন আবিস্কার করে যথাযথ ট্রায়াল প্রক্রিয়া শেষ করে সবে চুড়ান্ত প্রয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু বাকীরা এখনো অন্ধকারে।

 

তবে,প্রথম দফা ভ্যাকসিন আসার পর জানুয়ারী/ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যেই আরো মোট ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আসবে। এরপর অক্সফোর্ড-এস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিন আসতে শুরু করবে। এরমধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তত্ত্বাবধানে আবিষ্কৃত কোভ্যাক্স ভ্যাকসিন হাতে পাওয়া যাবে।

 

যেহেতু প্রথম দফায় ভ্যাকসিনের সংখ্যা মাত্র ৫০ লাখ। তাই সেগুলো বিতরন নিয়ে যাতে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হতে পারে তারজন্য সরকার ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিন বিতরনের একটি অগ্রাধিকার প্রস্তাবনা পেশ করেছে। যেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কারা আগে ভ্যাকসিন পাবে তার একটি খসড়া প্রকাশ করেছে।
এছাড়ায় করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগের সুষ্ট ব্যবস্থয়াপনা বজায় রাখতে মন্ত্রনালয়,জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে নানা কমিটি গঠন করা হয়েছে।

 

করোনা ভ্যাকসিন

গনমাধ্যমে প্রকাশিত স্বাস্থ্য বিভাগের খসড়া নীতিমালা থেকে জানা যায়,আপাতর ৪ টি ধাপে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে। যার কারনে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। পুরা প্রক্রিয়াটি সমন্বয় করবে জেলা, সিটি, পৌরসভা ও উপজেলা কোভিড-১৯ সমন্বয় কমিটি।

 

নিম্নে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী করোনা ভ্যাকসিন আমদানির সংখ্যা ও অগ্রগন্য তালিকা তুলে ধরা হলোঃ-

খসড়া পরিকল্পনা অনুযায়ী মোট ৪ টি ধাপের ৫ টি অংশে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। প্রথমে আছে পর্যায়-১(এ), পর্যায়-১ (বি), পর্যায়-২, পর্যায়-৩ এবং পর্যায়-৪ । এভাবেই অগ্রগন্য তালিকা অনুযায়ী ধাপে ধাপে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

পর্যায়-১ (এ):-

প্রয়োগের সময়ঃ- আনুমানিক জানুয়ারীর মধ্যে
ভ্যাকসিনের সংখ্যা= ৫২ লাখ
যারা পাবেঃ-
১। সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী= প্রায় ৩ লাখ
২। বেসরকারী স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্টানের (এনজিওসহ) চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী= প্রায় ৬ লাখ
৩। সরকারী ও বেসরকারী স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের প্রসাশনিক কর্মকতা ও কর্মী= প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার
৪। সুর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধা= প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার
৫। সামরিক/আধা সামরিক/বে সামরিক/আইন শৃঙ্খলা রক্ষাক্রী বাহিনী= প্রায় ৯ লাখ
৬। প্রজাতন্ত্রের গুরুত্বপুর্ন কর্মকর্তা(মন্ত্রনালয়,সচিবালয়/ডিসি/ইউএনও)= প্রায় ৫ হাজার
৭। গনমাধ্যম কর্মী ও সাংবাদিক= প্রায় ৫০ হাজার
৮। জনপ্রতিনিধি= ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮
৯। সিটি কর্পোরেশনের কর্মী= প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার
১০। ধর্মীয় পেশাজীবি= প্রায় ৫ লাখ ৮৬ হাজার
১১। দাফন ও সৎকারে যুক্ত কর্মী= প্রায় ৭৫ হাজার
১২। গ্যাস,পানি,বিদ্যুত,ফায়ার সার্ভিস ও পরিবহন কর্মী= প্রায় ৪ লাখ
১৩। বন্দর ব্যবস্থপনা কর্মী= প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার
১৪। প্রবাসী শ্রমিক= প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার
১৫। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচারী= প্রায় ৪ লাখ
১৬। ব্যাংক কর্মী= ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬২১
১৭। অসুস্থ ও কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনোকম্প্রোমাইজড ঝুকিপুর্ন রোগী = প্রায় ৬ লাখ ২৫ হাজার
১৮। জরুরী রিজার্ভ= ৭৮ হাজার

 

পর্যায়-১ (বি):-

ভ্যাকসিনের সংখ্যা= ১ কোটি ২০ লাখ
যারা পাবেঃ-
এ পর্যন্ত পর্যবেক্ষনে করোনায় বেশী বয়স্কদের মৃত হার বেশী থাকায় এ পর্যায়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা ভ্যাকসিন পাবেন ৬০ বছর বা তদূর্ধ ব্যাক্তিগন।

 

পর্যায়-২:-

ভ্যাকসিনের সংখ্যা= ১ কোটি ৭২ লাখ
যারা পাবেঃ-
১। ৫৫ বছর বা তদূর্ধ ব্যক্তি(যারা পুর্বে ভ্যাকসিন পাননি)= প্রায় ৫৫৬৬৭৫৭
২। বয়স্ক ও ঝুকিপুর্ন রোগে আক্রান্ত= প্রায় ৩০ লাখ
৩। ঝুকিপুর্ন এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মী= প্রায় ১৭ লাখ ৫০ হাজার
৪। পুর্ববর্তী ধাপে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া গনমাধ্যম কর্মী= ৫০ হাজার
৫। দুর্গম অঞ্চলের বাসিন্দা= প্রায় ১০ লাখ
৬। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী= প্রায় ১২ লাখ
৭। পরিবহন কর্মী= প্রায় ৫ লাখ
৮। হোটেল,রেস্টুরেন্ট,ফার্মেসীতে কর্মরত= প্রায় ২ লাখ ৪২ হাজার
৯। পোষাক কারখানার কর্মী= প্রায় ৩৬ লাখ
১০। জরুরী রিজার্ভ = ৩ লাখ

 

পর্যায়-৩:-

ভ্যাকসিনের সংখ্যা= ৩ কোটি ৪৫ লাখ
যারা পাবেঃ-
১। শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী(যারা আগের ধাপে পাননি)= প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার
এরপর অগ্রাধিকার পাবে অন্তসত্ত্বা নারী, আগের ধাপে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া সরকারী/স্বায়ত্ত্বশাসিত/আধা সরকারী কর্মচারী, জরুরী সেবায় নিয়োজিত কর্মী, কয়েদী ও জেলকর্মী, গৃহ হীন ও বস্তিবাসী, কৃষি ও খাদ্য সরবরাহে নিয়োজিত কর্মী ও ৫০-৫৪ বছর বয়সী ব্যক্তি যারা আগের ধাপে ভ্যাকসিন পাননি।

 

পর্যায়-৪:-

ভ্যাকসিনের সংখ্যা= ৬ কোটি ৯১ লাখ
যারা পাবেঃ-
এই ধাপে শিশু,কিশোর,স্কুলগামী ছাত্র ছাত্রী এবং পুর্বের ধাপে বাদ পড়া ব্যক্তিগন অগ্রাধিকার পাবেন।

 

অত্যাবশ্যকীয় বাধ্যবাধকতার কারনে ভ্যাকসিন গুলো পর্যায়ক্রমে হাতে আসবে, তাই অগ্রগন্য তালিকার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে করোনা ভ্যাকসিন সব মানুষের কাছে পৌছে দিতে সরকার এমন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।