ভিসা, মাস্টারকার্ড বা এমেক্সের আদলে আন্তর্জাতিক কার্ড সেবার স্থানীয় বিকল্প হিসাবে দেশে প্রথমবারের মতো চালু হলো “টাকা পে” Taka Pay Debit Card ।
সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে ইতিমধ্যেই টাকা পে কার্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও এর পুরো সুবিধা চালু হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
টাকা পে ডেবিট কার্ডটি প্রস্তুত করতে যাবতীয় কারিগরি বিষয়াদি দেখভাল করছে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান “ফিম”।
রেজিষ্টেশন প্রক্রিয়া
প্রথম অবস্থায় রাস্ট্রায়ত্ত্ব সোনালী ব্যাংক এবং বেসরকারি ব্রাক ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক Taka pay কার্ড সেবা চালু করেছে। আছাড়াও ইস্টার্ন ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক এবং মিউচুয়াল ট্রাষ্ট ব্যাংক টাকা পে ডেবিট কার্ড ইস্যু করার সুযোগ পাবে।
আন্তর্জাতিক কার্ডগুলির নিজস্ব প্লাটফর্ম রয়েছে ও সারাবিশ্বে তাদের কার্ডগুলির গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে। লেনদেন মধ্যস্থতা করার জন্য তাদের নিজস্ব সক্রিয় ব্যবস্থা রয়েছে।
এক্ষেত্রে Taka Pay Debit Card এর লেনদেন নিস্পত্তি করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীন ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ অব বাংলাদেশ (এনপিএসবি) এর মাধ্যমে।
যে প্রক্রিয়ায় এক ব্যাংকের গ্রাহক অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা লেনদেন করে থাকে। খুব শীঘ্রই দেশের সবগুলো ব্যাংক টাকা পে ডেবিট কার্ড সেবা চালু করবে।
Taka Pay Debit Card কি
সব এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন, পয়েন্ট অব সেলস (পজ) এবং দেশের যেকোন অনলাইন প্লাটফর্মে টাকা পে কার্ড ব্যবহার করে লেনদেন করা যাবে। ভবিষ্যতে Taka Pay Debit Card টি তে ক্রেডিট কার্ডের সব সুবিধা যুক্ত করা হবে।
অচিরেই টাকা পে ডেবিট কার্ডটি ভারতে ব্যবহার করা যাবে বলে জানা গেছে। এতে করে বিপুল পরিমান ভারত ভ্রমনকারী বাংলাদেশী কোন প্রকার ডলার এক্সচেঞ্জ ফি ছাড়াই ভারতের যেকোন এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবে। শুধু ভারতই নয় অদুর
ভবিষ্যতে টাকা পে কার্ডটি আন্তর্জাতিক ভাবে ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হবে। এই কার্ডের মাধ্যমে প্রচলিত কার্ডের চেয়ে ৫-৬ শতাংশ খরচ কম হবে।
প্রাথমিক অবস্থায় টাকা পে কার্ডের নিরাপত্তায় ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ ব্যবহার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য Taka Pay Debit Card এ অত্যাধুনিক ইএমভি প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হবে।
টাকা পে কার্ডের সুবিধা
দেশের ৪৩ টি ব্যাংক ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড ইস্যু করে থাকে সব মিলিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের ইস্যুকৃত কার্ডের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ২৭ লাখের বেশী। এইসব সব কার্ড গুলো সব বিদেশী কোম্পানীর তৈরি।
নির্দিষ্ট ফির বিপরীতে ব্যাংকগুলো কার্ডসেবা দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে সমস্যা হলো এক ব্যাংকের ইস্যু করা কার্ড অন্য ব্যাংকের বুথে ব্যবহার করলে বাড়তি ফি দিতে হয়।
তাছাড়া ব্যাংকভেদে কার্ড ব্যবহারের ফি বাবদ ১৫০/৩০০ টাকা ফি দিতে হয় পাশাপাশি ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রদান করতে হয়।
গ্রাহকের কাছ থেকে ব্যাংকের নেওয়া ফির একটি অংশ চলে যায় কার্ড মালিক বিদেশী কোম্পানীর হাতে। এতে প্রচুর পরিমান মুদ্রা বিদেশে চলে যায়। Taka Pay Debit Card এর ব্যবহারের ফলে মানুষ এই অধিক অর্থ অপচয় থেকে রক্ষা পাবে।
ইকমার্স লেনদেনে টাকা পে কার্ড ব্যবহারের প্রস্তুতি চলছে, ফলে অনলাইন কেনাকাটায় পেমেন্ট সংক্রান্ত জটিলতার অবসান ঘটবে।
পরবর্তীতে Talkative Pay Debit Card আন্তর্জাতিক ভাবে চালু হলে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সম্ভাবনার এক নতুন দ্বার উম্মোচিত হবে। পেমেন্ট সংক্রান্ত জটিলতায় ফ্রিল্যান্সাররা স্বস্তিতে লেনদেন করতে পারবে।
বিস্তারিত জানতে
বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসিয়ল ওয়েবসাইটে নজড় রাখুন।