মসলিনের উৎপাদন বন্ধের পর থেকে এই তুলার চাষ ও বন্ধ ছিল

অজানা রহস্য বাংলাদেশ
মসলিন! এতদিন পাঠ্যপুস্তক সহ বিভিন্ন বই ও গল্পের মাধ্যমে শুনে আশা এই কাপড় আমাদের মাঝে আবার ফিরে এলো প্রায় ১৭০ বছর পর! গবেষকদের ৬ বছরের প্রচেষ্টায় তা ফিরে এসেছে। এখন এই কাপড়ের বাণিজ্যিক উৎপাদনও শুরু হবে।

 

এই গবেষণায় দুইটি আলাদা বিষয় গুরুত্বপুর্ন।

 

প্রথমটি হচ্ছে ফুটি কার্পাস। মসলিনের উৎপাদন বন্ধের পর থেকে এই তুলার চাষ ও বন্ধ ছিল। গত ১৭০ বছর ধরে এই তুলার গাছটি বন্য অবস্থায় টিকে ছিল, যা বিস্ময়কর। সাধারণ মানুষ এতবছর এই গাছটিকে আগাছা হিসেবেই দেখেছে! গবেষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আল্লাহর ইচ্ছায় গাছটি আবার খুঁজে পাওয়া গেছে। এখানে উল্লেখ্য বিষয় হচ্ছে, যদি এই গাছটি বন্য অবস্থায়ও টিকে না থাকত তাহলে আর মসলিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব হতনা।

 

২য়টি হচ্ছে কারিগর। এই তুলা থেকে সুতা উৎপাদন এবং সুতা থেকে কাপড় উৎপাদনে দুই ধরনের কারিগর কাজ করেছেন। মসলিনের সাথে সাথে তার কারিগররাও বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিলেন। যারা বর্তমান অন্য ধরনের কাপড় ও সুতা উৎপাদন করেন তাদের থেকে খুজে বের করে প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন মসলিন কাপড়ের উৎপাদন শুরু হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে এত পাতলা সুতা ও কাপড় কোন সয়ংক্রিয় যন্ত্র দিয়ে উৎপাদন সম্ভন নয়, প্রয়োজন দক্ষ হাতের কারিগর। অতএব এই কারিগররা যদি বিলুপ্ত হয়ে যেতেন তাহলেও মসলিন ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব হয়ে যেত।

 

তাহলে এই মসলিন পুনরুদ্ধার প্রকল্প আমাদের কিছু শিক্ষা দিল। যেমন আজকে আপনার বাড়ির পাশের আগাছা হয়তো ভবিষ্যৎে কোন প্রয়োজনীয় মহামুল্যবান গাছ হয়ে যেতে পারে, যা বর্তমানে শুধুই আগাছা। গ্রামে এখনো অনেক ধরনের আগাছা গ্রামীন জঙ্গলে পাওয়া যার বিভিন্ন ওষুধি গুণাগুণ রয়েছে, এছাড়াও হাইব্রীড জাতের ফসলের আগ্রাসনে আমাদের দেশীয় জাতের ফসল হারিয়ে যাচ্ছে।

 

এজন্য আমাদের প্রয়োজন একটি রাষ্ট্রীয়ভাবে বীজ সংরক্ষণাগার যেখানে যাবতীয় ফসলের বীজ প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় গাছের বীজ,এমনকি সকল আগাছার বীজও সংরক্ষিত থাকবে।

 

একই ভাবে এমন অনেক পেশা যা প্রতিদনই একটু একটু করে হারিয়ে যাচ্ছে আধুনিক যন্ত্র ও রোবটের কাছে। এজন্য এই ধরণের সকল পেশা যার জন্য বংশপরম্পরার জ্ঞ্যান ও দক্ষতা প্রয়োজন তার কারিগরদের সল্প আকারে হলেও পেশাসহ টিকিয়ে রাখা।