পর্যটন নগরী কক্সবাজার টু ঢাকা রুটে দ্বিতীয় আন্তঃনগর ট্রেন হিসাবে যাত্রা শুরু করলো পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন। শুধুমাত্র চট্রগ্রাম ষ্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়ে ট্রেনটি ননষ্টপ চলাচল করবে।
ডিসেম্বর। ২০২৩ সালের পূর্বে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাতায়াতের জন্য ভ্রমন পিপাসু মানুষের জন্য দুটি পথ খোলা ছিল।
মধ্যবিত্তের জন্য নানা বিড়ম্বনার দীর্ঘ সময় ধরে সড়কপথের বাস যাত্রা অন্যদিকে পয়সাওয়ালাদের জন্য ছিল ব্যয়বহুল বিমান পথ।
ডিসেম্বর ২০২৩ মধ্যবিত্তের সমুদ্র বিলাসের সাধ মেটাতে চালু হলো ঢাকা টু কক্সবাজার সরাসরি ট্রেন যাত্রা।
কক্সবাজার এক্সপ্রেস চালু হওয়ার পর যেন সাধারন মানুষ রেলপথেই খুজে পেল বিমান ভ্রমনের ছোয়া।
রেলওয়ে যাত্রী সেবা অধিকারের তালিকা
এরপরই যুক্ত হলো আধুনিক সুবিধা সম্বলিত বিলাসবহুল পর্যটক এক্সপ্রেস ননষ্টপ আন্তঃনগর ট্রেন।
আজকের পোষ্টে আমরা Porzotok Experss Train এর ভাড়া ,যাত্রার সময়সূচি সহ বিস্তারিত তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো।
রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের সকল ট্রেনের যাত্রার সময় জানতে পড়ুন
পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন এর যাত্রা শুরু
কোরিয়া থেকে আমদানী করা একেবারে নতুন ৩২ বগির ১৬ টি কোচ দিয়ে ১০ জানুয়ারী ২০২৪ থেকে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন আনুষ্টানিক যাত্রা শুরু করেছে।
১৬ কোচের ট্রেনটির মোট আসন সংখ্যা হলো ৭৮০ টি। যাত্রীদের জন্য ট্রেনটিতে প্রায় সব ধরনের অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে।
ঢাকা হতে রেলপথে কক্সবাজারের দুরত্ব প্রায় ৫৫১ কিলোমিটার।পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন টি যদিও ঘন্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিবেগে চলার সক্ষমতা রয়েছে তবে এটি ঘন্টায় ১৩০ কিলোমিটার গতিবেগে যাত্রা করবে।
সেই হিসাবে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যেতে সবমিলিয়ে ৮ থেকে ৯ ঘন্টা সময় লাগবে।
ঘরে বসেই জেনে নিন ট্রেনের অবস্থান
পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন এর যাত্রার সময়সূচি
বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দ্যেশ্য ছেড়ে যাওয়া পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটির কোড নাম্বার হবে ৮১৫। এটি কক্সবাজার থেকে রাত ৮ টায় ছেড়ে চট্রগ্রামে পৌঁছাবে রাত ১০.৫০ মিনিটে।
চট্রগ্রামে ২৫ মিনিট যাত্রা বিরতি শেষে রাত ১১.১৫ মিনিটে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবে। বিমান বন্দর ষ্টেশনে ৩ মিনিট যাত্রাবিরতি দিয়ে সর্বশেষে ট্রেনটি কমলাপুর ষ্টেশনে পৌঁছাবে রাত ৪.৩০ মিনিটে।
ট্রেনের টিকিট কাটা নিয়ে আর ঝামেলা নয়
অন্যদিকে, ট্রেনটি ৮১৬ নম্বর কোড নিয়ে কমলাপুর ষ্টেশন থেকে কক্সবাজারের উদ্দ্যেশে ছেড়ে যাবে ৬.১৫ মিনিটে।
বিমানবন্দর ষ্টেশনে ৫ মিনিট যাত্রা বিরতি দিয়ে চট্রগ্রাম ষ্টেশনে গিয়ে পৌঁছাবে ১১.২০ মিনিটে ।
এখানে ২০ মিনিটের যাত্রাবিরতি শেষে আবার কক্সবাজারের উদ্দ্যেশ্যে রওয়ানা দেবে। সবশেষে কক্সবাজার ষ্টেশনে পৌঁছাবে বেলা ৩ টায়।
জয়পুরহাট থেকে ছেড়ে যাওয়া সকল ট্রেনের সম্ময়সূচি জেনে নিন
(Porzotok Express Train) পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধের দিন
প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ে চলাচল করলেও ট্রেনটি সপ্তাহে ১ দিন বন্ধ থাকবে। পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির আওতায় ১ দিন বন্ধ থাকবে।
পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন এর ভাড়ার তালিকা
বাংলাদেশ রেলওয়ে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা অনুযায়ী ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাতাযাতের জন্য শোভন চেয়ারে ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে ৬৯৫ টাকা। স্নিগ্ধা তে ভাড়া ১৩২৫ টাকা।
এসি সিটের জন্য ভাড়া গুনতে হবে ১৫৯০ টাকা । আর এসি বার্থ এর জন্য ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে ২৩৮০ টাকা।
পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন এর টিকিট প্রাপ্তির জন্য রেলওয়ের ইটিকেট সিস্টেম ব্যবহার করে অনলাইনে টিকিট বুক এবং ক্রয় করা যাবে।
উপসংহার
পর্যটন নগরী কক্সবাজারের বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্রসৈকত প্রতিটি মানুষকে আকর্ষণ করে। তাইতো দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার সমুদ্র বিলাসী মানুষ কক্সবাজারের টানে ছুটে আসে।
কিন্তু এতোদিন সাধারন মানুষের সাধ্যের মধ্যে সড়কপথের ঝক্কিঝামেলা বাস ভ্রমনই ছিল একমাত্র ভরসা।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর গত ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের শুভযাত্রার মাধ্যমে সেই প্রতিক্ষার অবসান ঘটে।
ফলে ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার যাতায়াতের নতুন এক দিগন্ত উম্মোচিত হয়।
পরিবার পরিজন নিয়ে ঝামেলাহীন আরামদায়ক ট্রেন যাত্রার শুভ সূচনা কক্সবাজারের প্রতি মানুষের আকর্ষণ শতগুন বাড়িয়ে দেয়।
তারই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা শুরুর কিছুদিন বাদেই বিলাসবহুল পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হলো।