শিক্ষা প্রতিষ্টান পুনরায় খোলা

শিক্ষা প্রতিষ্টান পুনরায় খোলা র পুর্নাঙ্গ গাইডলাইন প্রকাশ

বাংলাদেশ
কোভিড-১৯ তথা করোনা দশায় দীর্ঘ প্রায় ১ বছর বন্ধ থাকার পর অবশেষে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্টান পুনরায় খোলা র পরিকল্পনা গ্রহন করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর(মাউশি)।
সেই সাথে কয়েকটি ধাপে স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্টান গুলোকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, আগামী ১ সেপ্টেম্বর আবারও এসব বিষয় নিয়ে সভা হবে। সেখানেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য সুখবর
গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, এ ছুটি ছিল ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এখন নতুন করে আবার উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

 

৪ টি ধাপে যথাযথ নির্দেশনা বাস্তবায়ন পুর্বক যথাযথ কর্তৃপক্ষের আদেশ পাওয়া মাত্র সকল শিক্ষা প্রতিষ্টান খুলে দেওয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্টান সংশ্লিষ্টদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

 

প্রথম ধাপে বলা হয়েছে নিরাপদ শিক্ষা প্রতিষ্টান পরিচালনার জন্য পরিকল্পনা গ্রহন, দ্বিতীয় ধাপে শিক্ষা প্রতিষ্টান প্রস্তুত করা, তৃতীয় ধাপে নিরাপদে শিক্ষা প্রতিষ্টান চালু করার কথা বলা হয়েছে এবং সর্বশেষ ধাপে চালু হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্টানে করোনার বিস্তাররোধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

 

ইউনিসেফের সহযোগিতায় তৈরি কৃত ”কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্টান পুনরায় চালুকরন” নামক ৩৯ পৃষ্টার নির্দেশিকায় ৪ টি ধাপের বিস্তারিত বিবরন রয়েছে।

 

নির্দেশিকাটি প্রনয়নে যে মুলনীতি সমুহ অনুসরন করা হয়েছেঃ

  • শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া;
  • জাতীয় পর্যায়ের সকল স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দেশনা মেনে এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধিসমুহ বিবেচনায় রেখে সর্বোচ্চ নিরাপদ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে শিক্ষা প্রতিষ্টান পুনরায় চালুকরন;
  • শিক্ষা প্রতিষ্টান পুনরায় চালুকরন প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের (শিক্ষক,অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষা প্রতিষ্টান  কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় স্বাস্থ্য ও প্রসাশন এবং কমিউনিটি) সম্পৃক্ত করন;
  • স্থানীয় প্রসাশন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার সাথে সমন্বয় করে শিক্ষা প্রতিষ্টান চালুকরন এবং সার্বক্ষনিক যোগাযোগের মাধ্যমে সঠিক তথ্য প্রাপ্তি, বাছাই ও তা শিক্ষা প্রতিষ্টানের জন্য প্রাসঙ্গীকরন;
  • দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত, জেন্ডার, ক্ষুদ্র জাতী গোষ্টী, প্রতিবন্ধিতা বিবেচনা করে সকলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন;
  • প্রতিটি শিক্ষার্থীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আনন্দঘন শিখন পরিবেশ নিশ্চিত করন;
  • কোভিড-১৯ পরিস্থিতি কে নতুন স্বাভাবিকতা (New Normal) হিসাবে বিবেচনা করা;
  • শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধিন সকল শিক্ষা প্রতিষ্টানের (সরকারী/বেসরকারী/আবাসিক/অনাবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্টান,কলেজ,মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্টান) জন্য বিবেচনাকরন;
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক প্রনীত, যা শিক্ষা প্রতিষ্টান পর্যায়ের দায়িত্ব ও কর্তব্যসমুহকে কেন্দ্র করে প্রনীত;
  • সর্বোপরি শিক্ষা প্রতিষ্টানের অবস্থান, প্রাতিষ্ঠানিক ও আর্থিক সক্ষমতা, জনবল ও দক্ষতা ইত্যাদি বিবেচনায় বাস্তবসম্মত ভাবে প্রনীত;
৪ টি ধাপের বিস্তারিত বর্ননার সারসংক্ষেপ নিম্নরুপঃ-

 

শিক্ষা প্রতিষ্টান পরিচালনার জন্য পরিকল্পনা গ্রহনঃ-

একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ নিম্নোক্ত নির্দেশনা মোতাবেক শিক্ষা প্রতিষ্টান খোলার পুর্নাঙ্গ পরিকল্পনা (বাজেটসহ) প্রনয়ন বাস্তবায়ন ও মনিটরিং করবে।শিক্ষা প্রতিষ্টান পুনরায় খোলা সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় সমুহ যথাযথভাবে বিবেচনা করে পরিকল্পনাটি প্রনয়ন করতে হবে।
এই ধাপে শিক্ষা প্রতিষ্টান পুনরায় খোলা র আগে প্রতিষ্টানের সার্বিক পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুযায়ী শিফটিং ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে সকল স্থানে ৩ ফুট দুরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
প্রথম ১৫ দিনের শিক্ষা কার্যক্রম কিরুপ হবে তার একটি পরিকল্পনা প্রনয়ন এবং প্রথম ২ মাসের মধ্যে কোন পরিক্ষা না নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি আনন্দঘন পরিবেশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পুনরায় স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে।

 

শিক্ষা প্রতিষ্টান প্রস্তুতকরনঃ-

নিয়মিত জীবানু নাশক প্রয়োগ সহ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের দায়িত্ব বন্টন। নিদিষ্ট সময় পরে ২০ সেকেন্ড ধরে সঠিক ভাবে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা এবং এ সংক্রান্ত সচেতনতা মুলক পোষ্টার দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে রাখার ব্যবস্থা গ্রহন করা।

 

নিরাপদে শিক্ষা প্রতিষ্টান চালু করাঃ-

প্রতিষ্টানে কর্মরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঠিক সংখ্যা নিরুপন করতে হবে। যাতে স্বাস্থ্যবিধি মোতাবেক নিরাপদে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়।

শিক্ষা প্রতিষ্টান পুনরায় খোলা

শিক্ষার্থীদের ৩ ফুট দুরত্ব বজায় রাখতে এক শিফটে কত জন শিক্ষার্থী থাকবে তা নিরুপন করা। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং প্রতিষ্টানের ধারনক্ষতার মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে।

 

শিক্ষা প্রতিষ্টানে করোনার বিস্তার রোধে পদক্ষেপঃ-

সকল প্রতিষ্টানে কন্টাক্ট লেস থার্মোমিটার স্থাপন এবং সকল শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পর্যবেক্ষনে রাখার কথা বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কারো শরীরের তাপমাত্রা বেশী পাওয়া গেলে তাকে তৎক্ষণাৎ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অথবা বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্টানের প্রবেশ পথ ও অভিভাবকদের বসার স্থানে ৩ ফুট দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। সকলের জন্য মাস্কের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাশন ও স্বাস্থ্য বিভাগের হট লাইন নাম্বার দৃশ্যমান স্থানে টাঙ্গিয়ে রাখার কথা বলা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর মাউশির ওয়েব সাইট থেকে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাবে।