প্রথমেই জেনে নিই বায়োফ্লক কি? বায়োফ্লক হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যে প্রক্রিয়ায় জৈব বর্জ্যের পুষ্টি থেকে পূনঃ ব্যবহারযোগ্য খাদ্য উৎপন্ন হয়।
কৃত্রিম ভাবে পানিতে জন্ম নেওয়া অনুজীব এবং শৈবালের আস্তরন পানি থেকে নাইট্রোজ্রন শোষন করে নেয়, পানিতে এমোনিয়ার পরিমান নিয়ন্ত্রন করে এবং এর প্রোটিন সমৃদ্ধ উপাদান গুলো মাছ খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করতে পারে।
বায়োফ্লক কি?
বায়োফ্লক কথাটির শাব্দিক অর্থ দাঁড়ায়, বায়ো অর্থ জীবন আর ফ্লক অর্থ হলো ভাসমান কনার সমষ্টি। মূলত একোয়াকালচার প্রযুক্তির সর্বশেষ সংস্করন হচ্ছে এই বায়োফ্লক পদ্ধতি।
যার ফলে মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নতুন করে পুকুর খননের প্রয়োজন পড়বে না। পানি ধরে রাখতে সক্ষম এমন যে কোন জায়গায় কিছু কলাকৌশল আর প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে মাছ চাষ করা সম্ভব।
বায়োফ্লক পদ্ধতির সুবিধাঃ-
বায়োফ্লক পদ্ধতির অনেকগুলো সুবিধার মধ্যে অন্যতম হলো, জমি স্বল্পতার সমস্য দূর করে ঘরে বাইরে যে কোন জায়গায় মাছ চাষ করার সুযোগ।
একটি পুকুরের সমপরিমান জায়গায় প্রায় ২০ গুন বেশী মাছ উৎপাদন করা সম্ভব। যার ফলে সেভাবে পুকুর বা ডোবার উপর নির্ভরশীলতা কমবে।
এই পদ্ধতিতে মাছের খাবারের খরচ ৩০ শতাংশ বেচে যায়।
এটি একটি প্রাকৃতিক ও পরিবেশ বান্ধব প্রক্রিয়া। যেখানে উপকারী অনুজীব গুলো সংরক্ষন করা হয়।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছের বৃদ্ধি দ্রুততার সাথে ঘটে। ফলে অল্প সময়ে অনেক বেশী উৎপাদন করা সম্ভব।
বায়োফ্লকের অসুবিধা সমূহঃ-
নাইট্রোজেন ও কার্বনের তারতম্য বুঝতে না পারলে এই পদ্ধতি সম্পুর্ন অকার্যকর।
এই পদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য সার্বক্ষনিক বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে।
সবকিছু মেনে চাষ করতে পারলে অবশ্যই লাভ হবে তবে যেকোন ক্ষতি হবে বড় ধরনের ক্ষতি।
এটি পরিচালনা করতে গেলে নুন্যতম পক্ষে কিছু টেকনিক্যাল জ্ঞান থাকা আবশ্যক। যা পানির রাসায়নিক অবস্থা বুঝতে সাহায্যে করবে।
বায়োফ্লকে কি কি মাছ চাষ করা যায়ঃ-
প্রথমত তেলাপিয়া, শিং, মাগুর, চিংড়ীসহ আরোও কিছু প্রজাতির মাছে বায়োফ্লক এর মাধ্যমে চাষ করা যায়। বিশ্বের অন্যান্য দেশে এখন পর্যন্ত শুধু তেলাপিয়া এবং চিংড়ী মাছই চাষ করা হয়। তবে প্রথমবস্থায় সবচেয়ে নিরাপদ এবং জনপ্রিয় হলো চিংড়ি মাছ।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে কি কি লাগেঃ-
প্রথমে পানি ধরে রাখার মতো জায়গা, সেটা চৌবাচ্চা বা ট্যাংক বা হাউজ হতে পারে। তারপর লাগবে লোহার খাচা, ত্রিপল, আউটলেট, টিডিএস মিটার, পি এইচ মিটার, এমোনিয়া টেস্ট কিট, বৈদ্যুতিক মটর, বিদ্যুৎ, মাছের খাবার, প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি।